ঢাকা , শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫ , ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
কুয়াকাটা সৈকতে ভেসে এলো নিমজ্জিত ট্রলারসহ নিখোঁজ জেলের লাশ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কর্নেল আজাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন ইউনিয়ন যাচ্ছে অন্য আসনে, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ টিকিট সিন্ডিকেটে জড়িত এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল দাবি পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের ২৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা মোহাম্মদপুরে সেনা অভিযানে ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৪ সাগর পাড়েও জন্ম নেয় ইতিহাস শেরপুরে যাত্রীবাহী বাস পুকুরে শিশু নিহত, আহত ১৫ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনে আসছে বড় পরিবর্তন উত্তরা-তুরাগে নীরবে চলছে দখলবাজি ও চাঁদাবাজি নওগাঁয় সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষ মেলা শুরু আদমদীঘির কয়াকুঞ্চি বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষকের সাত বছর যাবৎ এমপিও স্থগিত নীলফামারীতে ইয়াবাসহ কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার লালপুরে এক কোটি ৬২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ রাস্তার উদ্বোধন কলাপাড়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ৬৭ হাজার গ্রাহক অন্ধকারে মীরসরাইয়ে চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব কিশোরগঞ্জে ডাকাতির সময় ৫ জনকে গণপিটুনি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য কলিমুল্লাহ গ্রেফতার সরকারি অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগ রুট পারমিট ছাড়াই চলছে বিপুলসংখ্যক গণপরিবহন
সভা-সমাবেশ ও সেমিনারে সীমাবদ্ধ জলাবদ্ধতা

নেই পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা অল্প বৃষ্টিতেই ডুবছে ঢাকা

  • আপলোড সময় : ০৮-০৮-২০২৫ ১২:১৯:১২ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৮-২০২৫ ১২:১৯:১২ অপরাহ্ন
নেই পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা অল্প বৃষ্টিতেই ডুবছে ঢাকা
* ভারী বর্ষণে ডেমরায় ডুবছে সড়ক ও নিম্নাঞ্চল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পানি
* নগরে হাঁটলেই যত্রতত্র চিপস, বিস্কুটের প্যাকেট-বোতল পড়ছে রাস্তার পাশে ড্রেনে
* প্রতি মাসে দু’বারও ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিষ্কার করা হয়: ডিএসসিসি
* জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরবাসীরও দায়বদ্ধতা রয়েছে: বিআইপি


বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবছে প্রচ্যের রাজধানীখ্যাত ‘ঢাকা’। এতে জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। মূলত অপরিকল্পিত নগরায়ন, খাল ও জলাশয় ভরাট হওয়া এবং দুর্বল নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট্ররা। তারা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে জলাভূমি ও খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নগরের ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ কোনো না, কোনোভাবে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির নজির দেখতে পায় প্রতিনিয়ত। এর ফলে ভোগান্তির অন্ত থাকে না নগরবাসীর। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতি বছর সিটি করপোরেশন থেকে নানান উদ্যোগ ও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করলেও কোনোভাবেই জলাবদ্ধতা নিরসন হচ্ছে না। এর মূল কারণ পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকার কারণ হিসেবে বারংবার উল্লেখ করেছেন নগরবীদরা।
জানা গেছে, ঢাকার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ স্থানীয় সরকার ও ঢাকা ওয়াসার সেবা গ্রহণকারী। তবে সেই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নগরবাসি। যদিও পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতিকরণ এবং বর্জ্য অপসারণের গুরুত্বারোপ নিয়ে সিটি করপোরেশন থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও সেমিনারের আয়োজনের মাধ্যমে সমাধানের চিত্র তুলে ধরছে। দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের কাছ থেকে সেইসব সভা-সেমিনারে আশ্বাসও মেলে। তারপরও অল্প বৃষ্টিতেই নাকানি-চোবানি খেতে হয় নগরবাসীর। রাজধানীর মিরপুর, ধানমন্ডি, মহাখালী, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট, নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ পুরান ঢাকার বংশাল, ডেমরা-যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, সূত্রাপুর, নারিন্দা, দয়াগঞ্জ, টিকাটুলি, স্বামীবাগ ও গেন্ডারিয়া এলাকার বিভিন্ন অলিগলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। দুদিন আগের বৃষ্টিতেও এসব জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এসব এলাকায় ধারাবাহিকভাবে ড্রেনেজ পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি পুরান ঢাকার সূত্রাপুর এলাকায় দেখা যায়, ড্রেন থেকে বস্তায় ভরে ভরে ময়লা আবর্জনা তুলছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। এছাড়াও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বংশাল, দয়াগঞ্জ ও নারিন্দা এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো। সেখানকার একই দশা। ড্রেন থেকে বের করা ময়লা আবর্জনার মধ্যে দেখা যায়, পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল, বাসা বাড়ি থেকে ফেলা ময়লা আবর্জনা এমনকি পুরোনো জামাকাপড়ও আছে। এছাড়াও পুরোনো আসবাবপত্রের ভাঙাচোরা অংশ এবং পুরোনো ছেঁড়া জুতো ড্রেন থেকে বের করতে দেখা যায়। পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা সবুজ নামের একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী বলেন, বর্ষাকালের আগ থেকেই সিটি করপোরেশনের পরিছন্নতা কার্যক্রম চলমান আছে। প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন এলাকার ড্রেন থেকে কয়েক হাজার বস্তা করে ময়লা আবর্জনা ড্রেন থেকে বের করি। তারপর সেগুলো সিটি করপোরেশনের আর এক দল কর্মী এসে নিয়ে যায়। একইসুরে কথা বলেছেন সিটি করপোরেশনের পলাশ নামে আরেকজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। তিনি বলেন, ড্রেন থেকে উদ্ধার করা ময়লার মধ্যে বেশিরভাগ থাকে পলিথিন প্লাস্টিক। এসব পলিথিন প্লাস্টিক ড্রেনের মোড়ে এসে জমাট বেঁধে থাকে। যার কারণে ঠিকমতো পানি চলাচল করতে পারে না। আমাদের ডিউটিতো এইসব ময়লা আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করা। কিন্তু, দিনশেষে ভোগান্তি তো এলাকার মানুষকেই করতে হয়। বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতায় তাদের জামা কাপড় নোংরা হয়। তারা যদি পলিথিন প্লাস্টিক ড্রেনে না ফেলে তাহলে কিন্তু আর কষ্ট পোহাতে হবে না। ভারী বৃষ্টির কারণে রাজধানীর ডেমরা-খিলগাঁওসহ ডুবছে একের পর এক অভ্যন্তরীণ সড়ক ও নিম্নাঞ্চল। বেশ কিছু স্কুলের মাঠ তলিয়ে গিয়ে শ্রেণিকক্ষেও প্রবেশ করেছে পানি। একই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় আসা-যাওয়ার সড়কগুলো ডুবে আছে বলে স্কুলে আসতে ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, ডেমরার ঐতিহ্যবাহী সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডগাইর রুস্তম আলী হাই স্কুল ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টেংরা ওরিয়েন্টাল হাই স্কুল, মাতুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, জাকির হোসেন উচ্চ বিদ্যালয় ও সৃজনশীল স্কুলসহ বেশ কয়েকটি কিন্ডারগার্ডেন ও স্কুলের মাঠে বৃষ্টির পানি জমেছে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সড়ক ও স্কুলগুলোর মাঠে পানি জমে থাকায় ভোগান্তিতে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা। ডেমরার ভুট্টু চত্বর, কোনাপাড়া, কদমতলা মোড়, ফার্মের মোড়, মোমেনবাগ চৌরাস্তা ও আশপাশের অভ্যন্তরীণ সব সড়কে পানি জমে একাকার। এতে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া কোদাল দোয়া গ্রীন সিটি, ডগাইর মধ্যপাড়া, ডগার নতুন পাড়া, বামৈল, সানারপার, মধ্য ও পশ্চিম হাজিনগর এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়ক নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে ডেমরার নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ি ঘরেও পানি ঢুকেছে। ড্রেনের ও বৃষ্টির পানি মিলে এক বীভৎস পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে খিলগাঁও এলাকার কয়েকটি স্কুলে জলবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। অনেক স্কুলেই দেখা গেছে মাঠ ও শ্রেণিকক্ষে পানি জমে আছে, এবং রাস্তায়ও জলবদ্ধতার কারণে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তবে প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, জলবদ্ধতার কারণে নিয়মিত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। অনেক শিক্ষার্থী পানি ভেঙে স্কুলে যেতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে, কারো কারো জামাকাপড় নষ্ট হচ্ছে, আবার কেউ কেউ পা পিছলে পড়ে আহতও হচ্ছে। বিশেষ করে, স্কুলের মাঠগুলো নিচু হওয়ায় এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই জলবদ্ধতা তৈরি হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ও শরীরচর্চা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানায়, জলবদ্ধতার কারণে তাদের বিদ্যালয়ে আসতে এবং যেতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় তারা ময়লার পানিতে ডুবে থাকা রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে, যার ফলে চর্মরোগেরও সৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বলেন, ভারী বর্ষণে ডেমরা থানা এলাকার অনেক স্কুলের মাঠেই পানি জমে যায়। সেচ পাম্প দিয়ে এই পানি সরানোর জায়গাটাও থাকে না। কারণ, সড়কেই বৃষ্টির পানি জমে থাকে। আর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কারো নজরদারি চোখে পড়ে না এ সময়টায়। আগে ওয়ার্ডভিত্তিক কাউন্সিলররা থাকায় সাহায্য চাওয়া গেছে, যা এখন আর হচ্ছে না। এখন কারা এ সমস্যার সমাধান করবে, সেটি বুঝতে পারছি না। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে ডিএসসিসির অঞ্চল-৮ আঞ্চলিক কার্যয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান বলেন, ডেমরার নিম্নাঞ্চলগুলোর মধ্যে সাধারণত ডিএসসিসির ৬৫ থেকে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকা উল্লেখযোগ্য। এসব ওয়ার্ডে এরই মধ্যে টেন্ডারভিত্তিক যে রাস্তাগুলোর উন্নয়নকাজ হয়েছে, সেগুলো সুষ্ঠু ব্যবস্থার মাধ্যমে উন্নয়ন করা হয়েছে। আর বেশ কিছু রাস্তা একেবারে নিচু হওয়ার কারণে সেগুলোর এখনও উন্নয়ন হয়নি। এ ছাড়া ডিএনডির অভ্যন্তরীণ পানি নিষ্কাশন খালের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই বন্ধ করা হয়েছে। আর অবৈধ দখলে থাকা ওইসব খাল দিয়ে ভারী বর্ষণের পানি নিষ্কাশিত হতে দেরি হয় বলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তিনি বলেন, একটি বিশেষ প্রকল্প দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে নেওয়া হয়েছে, যা মিনিস্ট্রিতে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে উন্নয়ন অসম্পূর্ণ রাস্তাগুলো আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ করা হবে। তখন নিম্নাঞ্চলে আর জলাবদ্ধতা থাকবে না।
রাজধানীতে হাঁটলেই প্রতিনিয়ত চোখে পড়ে, মানুষজন অনায়াসে চিপস বা বিস্কুটের প্যাকেট এমনকি কোকের বোতল ছুঁড়ে ফেলছে রাস্তার ওপরে। সেই প্যাকেট বা বোতল গিয়ে পড়ছে রাস্তার পাশে ড্রেনে। এই দৃশ্য প্রতিদিনকার। ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ডাস্টবিন স্থাপন করা হলেও যথাযথ ব্যবহার করতে দেখা যায় না তেমন কাউকে। বংশাল এলাকা দিয়ে হাঁটতেই চোখে পড়ে এক যুবক পানীয় পান করে বোতলটি রাস্তা পাশে ছুঁড়ে ফেলেছে। কথা বলে জানতে পারি, তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী। রাস্তার পাশে বোতল ছুঁড়ে ফেলার কারণ জানতে চাওয়ার পর তিনি বলেন, আশেপাশের ডাস্টবিন নেই তাই এখানে ফেলেছি। তাছাড়া সবাই ফেলছে আমি ফেললে তো দোষের কিছু না। আর এজন্য তো জেল জরিমানা হবে না। কথা হয় সূত্রাপুর এলাকার বাসিন্দা ও একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক নজরুল মুন্সি। তিনি বলেন, নগরবাসী দায়িত্ব নিয়ে যথাযথ জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেললে নগরীর অনেক সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের অভ্যাস যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা। সেই ময়লা আবর্জনা গিয়ে পড়ে ড্রেনে। পরে ড্রেন ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়। এরপরেই তো শুরু হয় আসল সমস্যা। একটু বৃষ্টি হলেই এলাকার অলিগলিতে পানি জমে যায়। কারণ পানি নিষ্কাশনের পথ তো ময়লা আবর্জনায় ভরাট। রাজধানীতে প্রয়োজনের তুলনায় ডাস্টবিনের সংখ্যা অপ্রতুল হলেও আমাদের সদিচ্ছা পারে শহরটাকে সুন্দর করে রাখতে। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে পাড়া মহল্লায় ডাস্টবিন স্থাপন করা জরুরি। দেখা যায় অনেক অলিগলি পাড়া মহল্লাতে বাসা বাড়ির ময়লা আবর্জনা সব রাস্তার ওপরেই ফেলে রেখে যায়। সেসব ময়লা আবর্জনা আবার গড়িমসি খেয়ে ড্রেনে পড়ে। কিন্তু সবচেয়ে বড় বিষয় আমাদের সচেতন হতে হবে এবং দায়বদ্ধতা থেকে ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ প্ল্যানার্সের (বিআইপি) বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান বলেন, রাজধানীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের পাশাপাশি নগরবাসীরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। তিনি বলেন, রাজধানীতে আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থার যে আলাপ, সেটা কিন্তু দীর্ঘদিনের। কিন্তু তার আগে আমরা যারা রাজধানীতে বসবাস করছি তাদের সচেতন হতে হবে। কারণ আমাদের অসচেতনার কারণে শহর অপরিচ্ছন্ন হচ্ছে, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অচল হচ্ছে ময়লা আবর্জনা জমে। আমরা সচেতন হলে জলাবদ্ধতা কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। বিআইপি সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসানের সঙ্গে সুর মিলিয়েছে কথা বলেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের প্রতিটি অঞ্চলে আমাদের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান আছে। প্রতি শনিবার আমরা বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ পরিছন্নতা কার্যক্রম করে থাকি। সেখানে চার শতাধিক পরিচ্ছন্নতা কর্মী আমাদের সঙ্গে থাকেন। আমরা নগরবাসীকে যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলার জন্য র?্যালি করে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি। নগরবাসীকে বোঝানোর জন্য এবং আমাদের সহযোগিতা করার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ টুকু চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, রাজধানীবাসী সচেতন না হলে আমাদের এই শহরটা কখনও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হবে না। এমনকি জড়াবদ্ধতা নিরসনেও ব্যাপক বেগ পেতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন নগরবাসীর সহযোগিতা। অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে, রাজধানীবাসী ড্রেনে শুধু পলিথিন প্লাস্টিক ফেলে না, বাসা বাড়ির পুরনো লেপ-তোষক, কম্বল থেকে শুরু করে গাড়ির পুরানো জিনিসপত্রসহ বিভিন্ন কিছু ড্রেনের মধ্যে পাওয়া যায়।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স